বৃক্ক (ইংরেজি: Kidney) বা কিডনি মেরুদণ্ডী প্রাণিদেহের এক জোড়া শিম এর বীজ সদৃশ অঙ্গ বিশেষ যা উদরের পিছনের দিকে অবস্থিত, এবং যা মূত্র উৎপাদন ও নিষ্কাশন করে; এবং সেই সাথে শরীরের জল ও তড়িৎবিশ্লেষ্য পদার্থ বা ইলেকট্রোলাইটের (সোডিয়াম, পটাসিয়ামইত্যাদি) ভারসাম্য বজায় রাখে ও অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি হিসাবে কাজ করে। অঙ্গটি পেরিটোনিয়ামের পিছনে অবস্থান করে। এর বিস্তৃতি পিঠের দিকের প্রাচীরের কাছে মেরুদণ্ডের ঠিক পাশেই দু দিকে বক্ষদেশীয় কশেরুকার (t12) অঞ্চল থেকে শুরু হয়ে তৃতীয় কটিদেশীয় কশেরুকা (L3) পর্যন্ত।যকৃৎ এর অবস্থানের কারণে ডান বৃক্ক বাম বৃক্ক অপেক্ষা সামান্য নিচে থাকে।
ধমনী. :বৃক্কীয় ধমনী
শিরা:বৃক্কীয় শিরা
স্নায়ু:বৃক্কীয় স্নায়ু
অবস্থান : বৃক্ক উদরীয় গহ্বরে পেরিটোনিয়ামের পিছনে অবস্থান করে।ডান বৃক্ক মধ্যচ্ছদার নিচেই যকৃৎএর পিছনে এবং বাম বৃক্ক মধ্যচ্ছদার নিচে প্লীহার পিছনে থাকে।বৃক্কের উপরিভাগ ১১ তম এবং ১২ তম পর্শুকা(RIB)দ্বারা আংশিক আবৃত থাকে।এখানে অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি রয়েছে।সমস্ত বৃক্ক পেরিরেনাল ও প্যারারেনাল ফ্যাট এবং রেনাল পর্দা (Renal Fascia) দ্বারা আবৃত। পুরুষের বৃক্কের ওজন ১৫০ - ১৭০ গ্রাম এবং স্ত্রীর ১৩০ - ১৫০ গ্রাম।সচরাচর বাম বৃক্ক ডান বৃক্ক থেকে সামান্য বড় হয়ে থাকে।
গঠন :। বৃক্কের উত্তল এবং অবতল পৃষ্ঠ রয়েছে।অবতল পৃষ্ঠের গভীরতম অংশকে বৃক্কীয় হাইলাম বলে।এর মধ্য দিয়ে বৃক্কীয় ধমনী প্রবেশ করে এবং বৃক্কীয় শিরা ও মূত্রনালি বের হয়।
বৃক্কের গাঠনিক এবং কার্যকরী একককে নেফ্রনবলে। বৃক্কের প্যারেনকাইমা দুই ভাগে ভাগ হয়।বৃক্কীয় কর্টেক্স এবং বৃক্কীয় মেডুলা।এরা ৮ - ১৮ টি বৃক্কীয় লোবিউল এ বিভক্ত হয়।এদেরকে বৃক্কীয় পিরামিড বলে যেখানে বৃক্কীয় কর্টেক্সের চারপাশে মেডুলার কিছু অংশ বেষ্টন করে রাখে।দুটো বৃক্কীয় পিরামিডের মধ্যবর্তী অংশে বৃক্কীয় কর্টেক্সের কিছু অংশকে বৃক্কীয় কলামবলে।
কর্টেক্সে অবস্থিত নেফ্রনের যে অংশ ছাঁকনে নিয়োজিত থাকে,তাকে বৃক্কীয় করপাসলবলে,যার পরেই থাকে বৃক্কীয় নালিকা (Renal Tubule)যা কর্টেক্স থেকে মেডুলার গভীরে প্রবেশ করে। বৃক্কীয় কর্টেক্সের কিছু অংশ, বৃক্কীয় টিউবিউলের সমষ্টিকে মেডুলারি রে(Medullary Ray) যা পরবর্তীতে একক সংগ্রাহী ডাক্ট(Collecting Duct) এ পতিত হয়।প্রতিটি পিরামিডের চূড়া বা প্যাপিলা ছোট ক্যালিক্সে(Minor Calyx),কতগুলো ছোট ক্যালিক্স বড় ক্যালিক্সে(Major Calyx)এবং বড় ক্যালিক্স সম্মিলিতভাবে বৃক্কীয় পেলভিসেউদগত হয় যেখান থেকে মূত্রনালিবের হয়।
হাইলামের ভিতর দিয়ে মূত্রনালি এবং বৃক্কীয় শিরা বের হয় এবং বৃক্কীয় ধমনী ও স্নায়ু বৃক্কে প্রবেশ করে।এদের চারপাশে হাইলার ফ্যাট(Hilar Fat) লসিকা গ্রন্থি থাকে।হাইলার ফ্যাট, বৃক্কীয় সাইনাস নামক আরেকটি ফ্যাটি গহ্বরের সাথে সংযুক্ত থাকে।সামগ্রিকভাবে এরা বৃক্কীয় পেলভিস এবং ক্যালিক্স ধারণ করে এবং এদের বৃক্কীয় মেডুলারি টিস্যু থেকে পৃথক করে।
1. বৃক্কীয় পিরামিড 2. আন্তঃলবিউলার ধমনী • 3. বৃক্কীয় ধমনী • 4. বৃক্কীয় শিরা 5. বৃক্কীয় হাইলাম • 6. বৃক্কীয় পেলভিস • 7. মূত্রনালি • 8. ছোট ক্যালিক্স • 9. বৃক্কীয় ক্যাপসুল • 10. নিম্নস্থ বৃক্কীয় ক্যাপসুল • 11. উপরস্থ বৃক্কীয় ক্যাপসুল • 12. আন্তঃলবিউলার শিরা • 13. নেফ্রন • 14. ছোট ক্যালিক্স • 15. বড় ক্যালিক্স • 16. বৃক্কীয় প্যাপিলা • 17. বৃক্কীয় কলাম
কাজ : আবশ্যকীয় উপাদানের পুনর্শোষণসম্পাদনা
পরাবর্ত নালিকায় গ্লুকোজ সম্পূর্ণ পুনর্শোষিত হয়।এটি Na+/গ্লুকোজ কোট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে হয়। প্লাজমায় ৩৬০ mg/dL এর মত গ্লুকোজ থাকলে বাহক সম্পৃক্ত হবে এবং মূত্রে গ্লুকোজের উপস্থিতি পাওয়া যাবে।গ্লাইকোজ-ইউরিয়া হবার জন্য প্লাজমায় ১৬০ mg/dL গ্লুকোজ থাকাই যথেষ্ট,যা বহুমূত্র রোগের নির্ণায়ক।
গর্ভাবস্থা গ্লুকোজ ও অ্যামিনো এসিডের পুনর্শোষণ কমায়। হরমোন উৎপাদন করে যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন ডি তৈরি করে।
তাছাড়া এটি রক্তের pH নিয়ন্ত্রণ বা অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ৷
Posted by: Ashrafuzzaman Arif
------------------------------------------------------------------------------------